সুন্দরবন তীরবর্তী সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা এখানকার একটি ইউনিয়নের নাম বুড়িগোয়ালীনি এ ইউনিয়নের নাম করন করা হয়েছিল গবাদী পশু (গরু) পাবন ও দূধ বিক্রিতে বিখ্যাত ছিল তাই, এখানকার মানুষেষ জীবিকা নির্ভর করতো গরুর থেকে পাওয়া দূধ বিক্রি করে কিন্ত কালের বিবর্তনে আজ গবাদী পশু (গরু) পালন প্রায় শুন্যের কোটায়।এ ইউনিয়নের নীলডুমুর এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান এক দশক আগে ও তার গোয়ালে ১৭ টি গরু ছিল তার ম্যধে গাভী ছিল ৮ টি যার দূধ বিক্রি করে মাসে ইনকাম করতো ৯-১০ হাজার টাকা এবং বছর শেষে কিছু গরু বিক্রি করে ইনকাম করতেন লাক্ষ টাকা বর্তমান তার গোয়াল আছে কিন্ত তাতে গরু নেই।
উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নে বিড়ালক্ষীর বাসিন্দা শওকাত হোসেন ৯ বছর আগে তার গরু ছিল ছোটবড় মিলে ১৪ টি তার ম্যধে গাভী ছিল ৩ টা যার দূধ বিক্রি করে মাসে পেতেন ৪-৫ হাজার টাকা এবং বছর শেষে তিনি আয় করতেন ৬০-৬৫ হাজার টাকা বর্তমান তার গোয়ালে গরুর সংখ্যা ২ টি তাও নানান রোগে আক্রান্ত।
একয়ি এলাকার সোনাবান বেগম একদশক আগেও ছাগল পালতো ৩১ টি কয়েকটি ঘূর্নিঝড়ে নদীর বার্ধ ভেঙ্গে পানি আসার কারনে প্রথম ৬ ও পরে আরো ৩ টি ছাগল মারাযায় এবং এলাকায় চারন ভূমি কমে যাওয়ায় প্রকৃতিত গোখাদ্যের অভাব দেখাদেওয়ায় বাজারের খাবারের উপর নির্ভরশীল যারকারনে এখন তার গোয়ালে ছাগলের সংখ্যা মাত্র ৩ টি।
শ্যামনগর উপজেলার বাংলাদেল ইনডিয়া সীমান্তে অবস্তিত কৈখালী এলাকার আব্দুল কাদের তার নিজের ১৭ টি গরু ছিল গেল ১৩ বছরে বিভিন্ন ঘূর্নিঝড়ের সাথে মোকাবেলা করে বর্তমান তার গরু রয়েছে ২ টি পূর্বের জীবনকাহিনী জানতে চায়লে বলেন আমাদের মা বোন দের দিনের সকাল শুরু হতো গরুর গবর দিয়ে (নুড়ি)বানাতে বানাতে এবং আমরা সকালে গরুর দূধ দিয়ে ভাত খেতাম সে জীবনে শান্তি ছিল এখন এলাকায় গাছ গাছালী ও নেই ধুম মাঠ পড়ে আছে এখানে গরু খাবে কি?
উপকূলে গবাদী পশু (গরু)সংখ্যা কমার কারন কি স্থানীয়রা কি বলছে?
বেসরকারী উন্নায়ন সংগঠন সিডিওর নিরর্হী পরিচালক গাজী আল ইমরান জানান জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে উপকূলীয় এলাকায় লবন পানির কারনে মানুষ ধান চাষে ব্যাহাত হওয়ায় বিকল্প ব্যাবস্থা হিসেবে মানুষ চিংড়ি চাষের উপর নির্ভরশীল হলো তখন গো খাদ্যের চারনভূমির অভাব দেখা দেওয়ার কারনে মানুষ ক্রায় কৃত খাবার (কুড়ু, ভূশি, খৈল ইত্যাদী) হওয়ার কারনে মানুষ আর গরু পালন করতে পারছে না । বাজারের খাবার দিয়ে গরু পালন করতে গেলে তাদের লাভ হওয়া তো দূরের কথা উল্টে লচ হচ্ছে।
গরু পালন করে কি ধরনের সুফল পেতেন মানুষ ?
সাতক্ষীরার আশাশুনী উপজেলার প্রতাপনগরের বাসিন্দা ফরিদা বেগম ২০ বছর আগে মৃত্য স্বামীর রেখে যাওয়া ৩ গরুর দূধ বিক্রি করে ২ সন্তান কে বড় করেছে কিন্ত বার বার ঘূর্নিঝড় হওয়ার কারনে চারন ভূমি কমে যাওয়ায় গরু বিক্রি করতে রীতিমতো বাধ্য হয় তিনি,ফরিদা বেগম বলেন আগে বিলে ধান হতো নাড়াকুটো, ঘাস খাওয়ালে চলতে কিন্ত এখন আর বিলে কোন ফসলের চাষ হয় না সব বাগদা চাষের ঘের যার কারনে আর গরু (পোশিনা) বাজারের খাবার দিয়ে গরু পালন করলে লচ আর লচ হয়।
উপকূলের গরু পালনকারীরা কেন মুরগী খামারী হওয়ার আগ্রহী হলো ?
শ্যামনগরের আটুলিয়া ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান ব্যাবসায়ীক ভাবে গরুর খামারের ঘর করেছিল ২ লক্ষ টাকা খরচ করে সেখানে ২ জন করর্মচারী রেখে খামারে ৩০ টি গরু নিয়ে ব্যাবসা শুরু করলে প্রথম থেকে ২ বছর ভালোভাবে পরিচালনা হলেও ২০০৯ সালে ঘূর্নিঝড় আইলায় লোনা পানি আসার কারনে কিছু গরু মারা যায় এবং শুরু হয় রোগ আক্রান্ত হতে,অন্য দিকে লোনা পানির কারনে ঘাস ও খড় কমে যাওয়ায় সম্পন্ন বাজারের খাবারের উপর নির্ভর করতে হতো তার পর থেকে লচ হতে শুরু করে গরুর খামার করা বন্ধ করে দিয়ে, মুরগীর খামার শুরু করে তাতে অল্প টাকায় কম লাভ হলেও চস হওয়ার সম্বভনা কম থাকে গরুর খামারের তুলনায় ভালো ।
উপকূল থেকে গরুর পাশাপাশি যে সব প্রণী বিলপ্তীর পথে!
যেমন গরু পালন কমেছে তেমন ছাগল ও ভেড়া পালন কমার হার ও লক্ষনীয় তেমনই খাল বিলের মাছ তোড়, লাটা,শৌল, ইত্যাদী,পাখিও কমেছে যেমন চিল, সকুন,টিয়া,দোয়েল, সালিক,কমতে বাদ পড়েনি গাছও তাল ,অর্জুন,শুপারী।
মানুষ গরু পালন করা থেকে সরে আসার কারন কি স্থানীয় গবাদী পশু চিকিৎচক কি বলছে ?
স্বপন কুমার মন্ডল স্থানীয় গবাদী পশু চিকিৎচক তিনি যানান আমাদের এলাকার লবন পানি দিয়ে চিংড়ি চাষ বেড়ে যাওয়ায় গরুর চারুন ভূমি কমে যাওয়া প্রকৃত গো খাদ্যের চরম অভাব সহ দেখাদেওয়ার পাশাপাশি গরুর খাবার সুপিও পানি অথবা মিস্টি পানির পুকুর না থাকায়,লবন খাওয়ানোর কারনে গরুর ফুড পয়জনিং পেট ফাপতেছে,পাতলা পায়খানার মতো রোগে আক্রন্ত হচ্ছে ,খামার করলেও দূধের ক্রেতার অভাবের এখানে মিল্কভিটা প্রতিস্ঠার ও প্রয়োজন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা মাহবুব হোসেন বলেন ঘন ঘন বন্যার কারনে লবন পানি প্রবেশের হওয়া ও একটি প্রধান কারন ।
এ অবস্থা থেকে উত্তরনের পথ কি জানতে আমরা কথা বলেছি প্রাণ-প্রতিবেশ গবেষক ও বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) এর পরিচালক পাভেল পার্থের সাথে তিনি বলেন বাংলাদেশের ১৯ জেলা নিয়ে উপকূলীয় অন্চলের মধ্যে সাতক্ষীরা প্রচিন কাল থেকে মিস্টি ও ছানা জন্য বিখ্যাত,এ অন্চলে এত বেশি গরু পালতো মানুষ যে এখান থেকে দুধ নৌকায় করে কলকাতায় যেত শুধু গরু পালন না তার পাশাপাশি আদিবাশী সম্প্রদায়ের মানুষ শুকর পালতো সেসব এখন নেই বল্লে চলে। ২০০০ সাল থেকে মূলত এ অন্চলে গবাদী পশু পালন কমতে শুরু করে এবং সেটি ২০১০ সালে প্রকট আকার ধারন করে জলবায়ু পরির্বতনের কারনে বছরে ৩/৪ বার ঘূর্নিঝড় হয় বেড়িবাঁধ ভাঙ্গে লোকালয়ে লবন পানি ঢোকে , আবার অপরিক্লিত চিংড়ি চাষের কারনে লবন্ততা বৃব্দি পাচ্ছে অন্য দিকে আগে এসব এলাকায় দেশি ধান চাষ হতো তার সাথে ঝেউলো,চামনা,কেচুরী ঘাষ হতো, কিন্ত বর্তমান যেটুকু চাষের জমি আছে অধিক লাভের আশায় আমরা সেখানে ব্রি ধান ২৮/২৯ চাষ করি এবং আগাছানাশক ব্যাবহার করি যার কারনে , গবাদী পশু পালনের জন্য উপযোগী নেই, এ প্রতিস্তিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ বন্ধ করতে হবে, এলাকার বিভিন্ন স্থানের খাল গুলা ইজারা মুক্ত করে সেগুলো খনন করতে হবে , এ এলাকার জন্য প্রচিন আমলের দেশি গরু সহ যে সমস্ত গবাদী পশু ছিল সেসব পশু পালনের জন্য মানুষ কে উদব্ধ করতে হবে , এলাকার অসংখ্য যুবকদের বিনা শুধে লোন দিয়ে নিরাপদ গবাদী পশুর জন্য খাবার তৈরীর জন্য প্রশিক্ষন দিতে হবে। সব শেষ গবাদী পশু নির্রাপদ আনই ব্যাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য জন্য সংশিলিস্ট কতৃপক্ষকে জবাবদীহিতার আওতায় আনতে হবে।
Latest News from Coastal Community
Explore impactful journalism in coastal communities.
Latest Coastal Updates
Stay informed about coastal community developments.
Make a Difference Today
Your support helps amplify coastal voices and fosters impactful journalism in our communities.